জামালপুর জেলা প্রতিনিধি | শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯ | পড়া হয়েছে 447 বার
যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। জেলার সাত উপজেলায় পানিবন্দী রয়েছে অন্তত ১৩ লাখ মানুষ। পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। সড়ক ভেঙ্গে জামালপুর-সরিষাবাড়ী সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছন্ন।
শনিবার পর্যন্ত জামালপুরে যমুনার পানি সামান্য কমে বিপদসীমার ১৩৯ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বইছে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। ধীরে ধীরে পানি ছড়িয়ে পড়ছে জেলার বেশীরভাগ এলাকায়। ৬১টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভায় সরকারি হিসেবেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ। পানি ঢুকতে শুরু করেছে জামালপুর শহরের রামনগর, তেতুলিয়া, দেউড়পাড় চন্দ্রা, সদরের তিতপল্লা, দিগপাইত, কেন্দুয়া কালিবাড়ীসহ বেশ কয়েটি এলাকায়। এছাড়াও শনিবার দুপুরে সদরের কেন্দুয়া কালিবাড়িতে বন্যার তোড়ে সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে জামালপুরের সাথে সরিষাবাড়ী উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শনিবার সকালে বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া দক্ষিণ কুসলনগর গ্রামে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে খেলতে গিয়ে হামিদুল ইসলামের ছেলে রাহাত মিয়া(১০) পানিতে ডুবে মারা যায়। অপরদিকে শুক্রবার রাতে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ঝালুরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে রাজাবাদশা (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে সাপে কাটরে মুমুর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। সে ওই এলাকার মৃত কুন্দু শেখের ছেলে। প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে জেলার ১১০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান। গত তিনদিন ধরে প্রচন্ড গরমে বন্যা দুর্গত এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ।
জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা: গৌতম রায় জানান, দুর্গত এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের ৮০টি টীম কাজ করছে। তারা দুর্গত মানুষদের এই দুযোর্গ মুহুর্তে প্রাথমিক স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ডাইরিয়া, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে বন্দী থাকায় দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ফলে কোথাও ত্রাণ বিতরণের কথা শুনলেই, সেখানে ছুটে যাচ্ছেন বাানভাসি মানুুুুষেরা।
জামালপুর জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো: নায়েব আলী জানিয়েছেন, নতুন করে ১৩০ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯৮০ মেট্রিক টন চাল এবং ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে দুর্গত মানুষদের মাঝে রুটি ও খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে।